আঙুলের ছাপ পদ্ধতি আসছে সিম নিবন্ধনে

সিমের সঠিকনিবন্ধন নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক বা আঙুলের ছাপ পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বিজয় দিবসের দিনে এ পদ্ধতি চালুর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মোবাইল অপারেটররা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র থেকেএ তথ্য পাওয়া গেছে। নতুন সিম নেওয়ার ক্ষেত্রে নিবন্ধনের পর তা চালু হতে ৭২ ঘণ্টা সময় নেওয়া হবে। গ্রাহকের দেওয়া তথ্য জাতীয়



পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিলিয়ে তারপরেই সিম সক্রিয় করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব মোবাইল অপারেটরকে ১৬ ডিসেম্বর থেকে সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চালুর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার কেনা এবং খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে তা স্থাপন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতেও মোবাইল অপারেটরদের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বিষয়টি সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকবে। সিম কার্ড বিক্রি ও নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর ব্যাপারে গত আগস্টে প্রথম প্রস্তাব দেয় বিটিআরসি। গত মঙ্গলবার বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটরদের এ বিষয়ে একটি আলাদা বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে মোবাইল অপারেটররা তাদের গ্রাহক নিবন্ধনের তথ্য নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের (এনআইডি ) কাছে সরবরাহ করছে। এনআইডি ওই সব তথ্য তাদের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করছে। এ বাছাইয়ের মাধ্যমে যেসব সিম ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধন করা হয়েছে, তার তথ্য বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠাবে এনআইডি। আবার যেসব প্রকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একাধিক সিম নিবন্ধিত আছে, তার তথ্যও বের করার কাজ করছে এনআইডি। এসব তথ্য যাচাইয়ের পর ভুয়া পরিচয়পত্রের মাধ্যমে যেসব নিবন্ধিত আছে, সেগুলোর ব্যবহারকারীকে প্রকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধনের জন্য খুদে বার্তা পাঠাতে হবে মোবাইল অপারেটরদের। এ জন্য একজন গ্রাহককে সাত দিন সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে তিনি সঠিকভাবে নিবন্ধন না করলে ওই সিম চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর প্রকৃত পরিচয়পত্রের বিপরীতে যাঁদের একাধিক সিম নিবন্ধিত থাকবে, তাঁদেরও খুদে বার্তা দিয়ে জানানো হবে, তিনি কয়টি সিমের মালিকানা রাখবেন। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গ্রাহককে সাত দিন সময় দেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়াগুলো আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ করে ডিসেম্বরে বায়োমেট্রিক বা হাতের ছাপ প্রক্রিয়া চালু করা হবে। সব সিম ব্যবহারকারীকেই কি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, ‘এখন যে বাছাই প্রক্রিয়া চলছে, তাতে যাঁদের নিবন্ধন ঠিক থাকবে, তাঁদের এ প্রক্রিয়ায় আসতে হবে না।’ বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সবাইকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে কি না, তা চলমান যাচাই প্রক্রিয়া শেষে পরিষ্কার হবে। বিটিআরসির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মুঠোফোন সিমের সংখ্যা ১২ কোটি ৮৭ লাখ। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে মুঠোফোন অপারেটরদের প্রবেশের সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। মুঠোফোন কোম্পানিগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। সূত্রঃ প্রথম আলো

Related Posts
Previous
« Prev Post