নতুন মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই জরুরী কিছু টিপস দেখে নিন

বেশ কিছু অর্থ খরচ করে শখের জিনিসটি কিনতে গেলে নানা দোটানায় পড়তে হয়। এটা ভালো হবে তো, নাকি ওটা? এমন আরো অনেক প্রশ্ন। এ যুগে অতিপ্রিয় মোবাইল ফোনসেট কেনার সময় তো চিন্তার শেষ নেই। তাই আপনাদের মস্তিষ্কের চাপ কিছুটা কমিয়ে দিতে মোবাইল ফোনসেট কেনার ২০টি টিপস দেওয়া হলো। ১. ডিজাইন নিয়ে একটু চিন্তা করুন স্মার্ট ফোনের ক্ষেত্রে ডিজাইনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে কারো কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার কিছু নেই। এটা একান্ত নিজের রুচির ব্যাপার। বাজারের সব স্মার্ট ফোনের নজরকাড়া ডিজাইন রয়েছে। আবার বিভিন্ন কেস রয়েছে ফোনটিকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য। কাজেই নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা এবং রুচি অনুযায়ী ডিজাইন পছন্দ করাই ভালো। ২. ওজন এবং অনুভূতি মোবাইল ফোনসেটের এ বৈশিষ্ট্য নিয়ে কেউ তেমন মাথা ঘামায় না। অনেক ফোন আছে যা পকেটে থাকলে আপনি বুঝতেই পারবেন না যে কিছু একটা রয়েছে। মোবাইল ফোনসেট যত বড় হয় সাধারণত এর ওজনও তত বেশি হয়। তবে এসব দেখার আগে খেয়াল করবেন ফোনসেটে ব্যাটারি লাগানো রয়েছে কি না। কারণ ব্যাটারির ওজনটিও বেশ হয়। ৩. পর্দার আকারটিই সবকিছু নয় স্ক্রিনের আকারটি সবাই দেখেন নতুন মোবাইল কেনার সময়। এখন বড় স্ক্রিনের মোবাইল বেশি জনপ্রিয়। তবে সহজে বহন করতে চাইলে ছোট পর্দার মোবাইল নেওয়া উচিত। চার ইঞ্চি বা সাড়ে চার ইঞ্চি বা পাঁচ ইঞ্চি পর্দার মোবাইল ফোনেরও বেশ চাহিদা রয়েছে। ৪. ডিসপ্লের গুণগত মান পর্দার গুণগত মান অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়। সবচেয়ে ভালো মানের ডিসপ্লে ১০৮০পি (১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেলস)। তবে এই ডিসপ্লেযুক্ত ফোনের দামটিও বেশ চড়া হবে। খেয়াল করে দেখতে হবে ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে দেখলে ছবি পরিষ্কার দেখা যায় কি না। সাধারণ মানের মোবাইলের ডিসপ্লে ৭২০পি-এর কম হয়ে থাকে। ৫. অপারেটিং সিস্টেম মৌলিক কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় সিস্টেম। এদিকে আইফোনের রয়েছে আইওএস যার সাম্প্রতিকতম সংস্করণ হলো আইওএস ৭। আবার উইন্ডোজ অপারেটিংয়ের ভক্তের সংখ্যাও নেহায়েতই কম নয়। পছন্দেরটি বেছে নিন। কারণ অপারেটিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করেই গোটা ফোনের সব কার্যক্রম নির্ধারিত হয়। ৬. থ্রি-জি নাকি ফোর-জি আমাদের দেশে সবেমাত্র থ্রি-জি কানেকশন চালু হয়েছে। ডাটা কানেকশনের গতি নির্ভর করে এর ওপর। আরো দ্রুত কানেকশন দেয় ফোর-জি। এ যুগের স্মার্ট ফোনের জন্য থ্রি-জি কানেকশন নিতে পারে এমন মোবাইল বেশি ভালো। ৭. ব্যাটারির শক্তি ব্যাটারির শক্তি নির্ধারিত হয় মোবাইল ফোনটি কেমন তার ওপর ভিত্তি করে। তবে বড় মাপের স্ক্রিনের মোবাইল বেশি ব্যাটারি শক্তি ক্ষয় করে। তাই শক্তিশালী ব্যাটারি প্রয়োজন হবে মোবাইলটি অনেক সময় ধরে চালু রাখার জন্য। এখন ৩০০০ এমএএইচ সবচেয়ে বেশি শক্তির ব্যাটারি হিসেবে বাজারে চালু রয়েছে। ৮. সফটওয়্যার আপডেট রাখা ফোনের সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। আপনিও যদি নিজের ফোনের সফটওয়্যারগুলো আপডেট রাখেন তাহলে যন্ত্রটি সুন্দরমতো কাজ করবে। নয়তো নানা ভেজাল করবে যেকোনো কাজ করতে। নতুন কোনো অ্যাপস সাপোর্ট করবে না এবং ফোনটি ধীরগতির হয়ে যাবে। ৯. ২ জিবি র‌্যাম নেওয়ার চেষ্টা করুন ফোনের কার্যক্রমে দ্রুততা দেবে র‌্যাম। ফোন কিনতে বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করলে এক জিবি র‌্যামই যথেষ্ট। তবে অল্প কিছু অর্থযোগে বা পছন্দ পরিবর্তনে ২ জিবির ব্যবস্থা করা গেলে অনেক ভালো। আধুনিক মোবাইলগুলো ৩ জিবি পর্যন্ত র‌্যাম নিয়ে বাজারে আসছে। ১০. ক্যামেরা রেজ্যুলেশন অতি দরকারি নয় ক্যামেরা রেজ্যুলেশনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটিও নয়। কারণ ভালো মানের ছবি তোলার কাজ ক্যামেরার, মোবাইল ফোনের নয়। বেশি রেজ্যুলেশনের মোবাইল ক্যামেরার ছবি কিছুটা ভালো আসে। কিন্তু তা ক্যামেরার মতো নয়। তাই অন্য বিষয় বাদ দিয়ে ফোনে ক্যামেরা রেজ্যুলেন বেশি খোঁজাটা বোকামি। ১১. শক্তপোক্ত ফোন স্মার্ট ফোনের জন্য তা কতটা শক্তপোক্ত তা জরুরি বিষয়। তা ছাড়া পর্দাতে সহজে দাগ যেন না পড়ে সে জন্য স্ক্র্যাচ রেজিস্ট্যান্ট গ্লাস রয়েছে অনেক ফোনে। হাত থেকে পড়ে গেলেই ভেঙে বা ফেটে যাবে না, অন্তত তেমন তো হতে হবে ফোনটিকে। ১২. ব্লু টুথ বেশ জরুরি যাই কিনুন, দেখে নিন ব্লু টুথ রয়েছে কি না। এটি একটি দারুণ জিনিস। ব্লু টুথ ছাড়া অন্য কোনো মোবাইলের সঙ্গে আপনি কিছুই লেনদেন করতে পারবেন না। এখনকার দামি সব ফোনেই ব্লু টুথ রয়েছে। তবে কমদামি মোবাইল কিনতে গেলে একটু দেখে নিন তা রয়েছে কি না। ১৩. এনএফএস থাকলে ভালো এনএফএস বা নেয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বেশ প্রয়োজনীয় বিষয়। অন্য কোনো স্মার্ট ফোন বা ট্যাবের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদানের জন্য এনএফএস দরকার হয়। এ ছাড়া আপনার কেনাকাটার জন্য কোনো ডিজিটাল ওয়ালেট অথবা দাম পরিশোধের সাপোর্টেড প্রসেসর থাকলে তার ব্যবহার এনএফএস-যুক্ত মোবাইল সহজ করে দেবে। অ্যাপলের নিজস্ব এনএফএস প্রযুক্তি রয়েছে, যার নাম এয়ারড্রপ। ১৪. ঝামেলাবিহীন চার্জের জন্য ওয়্যারলেস চার্জিং তার ছাড়া চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা অবশ্য খুব প্রয়োজনীয় কিছু নয়। তবে যেখানে সেখানে প্লাগ পয়েন্ট না থাকার সমস্যায় ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম বেশ মজার বিষয়। ১৫. পপুলার রিভিউ ও রেটিং সাইট ব্যবহার করুন ইন্টারনেট থাকলে নানা সাইটে ঢুঁ মারতেই হয়। তবে ম্যালওয়্যারের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পপুলার রিভিউ ও রেটিং সাইটে ঘোরাফেরা করবেন। নইলে বিপদ। ১৬. অ্যাক্সেসরিজ অ্যাক্সেসরিজ সব মোবাইলের সঙ্গেই দেওয়া হয়। তবে অ্যাক্সেসরিজ দেখে ফোন পছন্দ করার দরকার নেই। স্মার্ট অ্যাক্সেসরিজ বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। ভালো মানের ফোনের অ্যাক্সেসরিজও বেশ ভালো হয়। ১৭. দাম এটা আসল বিষয়। এমনিতেই মোবাইল ফোনসেটের দাম যত বেশি হবে, তার সবকিছুই তত ভালো হবে। তবে মোবাইল ফোনসেট কেনার আগে একই মডেলের অন্য কোনো সংস্করণ খুব শিগগিরই বাজারে আসলে তা থেকে কোনো সুবিধে পান কি না ভেবে নিতে হবে। ১৮. কন্ট্রাক্ট ফোন নেওয়ার জন্য ইউরোপ-আমেরিকাতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন শর্তের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনসেট কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের দেশেও অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো এমন অফার দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছে এবং মোবাইলগুলোর মডেলের সঙ্গে দাম ও সুবিধাগুলোর তুলনা করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী নেবেন। ১৯. অ্যাপ্লিকেশন মোবাইল ফোনসেটেরর অ্যাপস প্রতিনিয়ত এত বেশি বানানো হচ্ছে যে, পছন্দ করতে গেলে আপনার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হবে। ইচ্ছামতো অ্যাপস ডাউন লোড করে ব্যবহার করুন। শুধু একটি বিষয় নজরে রাখবেন। মোবাইল ফোনসেটটি যেসব অ্যাপস সাপোর্ট করে তাই ব্যবহার করুন। আর যেসব অ্যাপস আপনার মোবাইলের জন্য নয় তা অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন না। তা ছাড়া মোবাইল ফোনসেট অনুযায়ী আলাদাভাবে অ্যাপসের কালেকশন ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে। সেখান থেকেই ফোনটির জন্য অ্যাপস বাছাউ করে নেওয়া উচিত। ২০। অবশ্যই বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে নিন আপনি যে মোবাইল কেনবেন সেটির সম্পর্কে তাহলে অনেক তথ্য পেতে পারেন
>

Related Posts
Previous
« Prev Post