একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০টি মোবাইল সিম


একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০টি মোবাইল সিম রাখার সীমা বেধে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার । মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান।
‘টেলিযোগাযোগ বিভাগের কার্যক্রমের অগ্রগতি বাস্তবায়নের পর্যালোচনা সভা’ শীর্ষক ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও উপস্থিত ছিলেন। তারানা হালিম বলেন, “একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে বা ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০টি সিম রাখার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
কয়েক দিনের মধ্যে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে বলে জানান তিনি। কারও কাছে ২০টির বেশি সিম থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু করার পর জানা যাবে- কার কাছে কতটি সিম রয়েছে। একটি নির্ধারিত সময়ের পর ২০ টির বেশি সিম গ্রাহকরা রাখতে পারবে না। তবে একটি এনআইডির বিপরীতে নির্দিষ্ট মোবাইল ফোন অপারেটরের কতগুলো সিম রাখা যাবে সে বিষয়ে কোনো সীমা নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান তারানা হালিম।
“করপোরেট গ্রাহকদের বিষয়ে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না, তবে যে সকল প্রতিষ্ঠান করপোরেট সেবা নিচ্ছে তাদের কোন গ্রাহক এই সিম ব্যবহার করছে তার এনআইডি নম্বর নিশ্চিত করতে হবে। কারণ সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো গ্রাহক চাকরি ছেড়ে দিলে বা চলে গেলে যেন কোনো সমস্যা না হয়।” বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সচিবালয়ে বৈঠকে গ্রাহকের ২০টির বেশি সিম রাখতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগির নির্দেশনা জারি করা হবে। এর আগে সোমবার একজন গ্রাহকের সর্বোচ্চ ১০টি সিম রাখার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তারানা। মোবাইল ফোন অপারেটরদের গ্রাহক বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নিবন্ধন নিয়ে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলার অবসানে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ কয়টি সিম রাখতে পারবেন সেই সংখ্যা বেধে দিতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগে যে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল তাতেও একটি এনআইডির বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০টি মোবাইল সিম রাখার সীমা বেধে দেওয়ার সুপারিশ এসেছিল। ওই প্রস্তাবে একজন গ্রাহক তার এনআইডি দেখিয়ে এক অপারেটরের পাঁচটির বেশি সিমের মালিক হতে পারবেন না বলেও উল্লেখ ছিল।
তারানা হালিম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর সিমের তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভা-ারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে গিয়ে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিম সংখ্যার সীমা বেধে দিতে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়ে তা নির্দিষ্ট করে দিতে তাগিদ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ওই চিঠিতে বলা হয়, এক এনআইডির বিপরীতে এক অপারেটরের সর্বোচ্চ সাতটি এবং সব মিলিয়ে ২৪টির বেশি সিম না রাখার নিয়ম করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ব অপারেটর টেলিটকসহ মোট ছয়টি অপারেটর মোবাইল ফোন সেবা দিচ্ছে।
বিটিআরসি’র অক্টোবরের তথ্য অনুযায়ী, মানুষের হাতে থাকা মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ১৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যেখানে দেশের জনসংখ্যাই ১৬ কোটি। নিবন্ধনে শৃঙ্খলা আনতে ১৬ ডিসেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে চূড়ান্তভাবে সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো।

Related Posts
Previous
« Prev Post